কত টাকা থাকলে হজ্ব ফরজ হয়-হজ ফরজের শর্ত সমূহ

কত টাকা থাকলে হজ্ব ফরজ হয় এ ধরনের প্রশ্ন অনেকের মনেই ঘুরপাক খায়। কারণ হজ্জ হচ্ছে ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম একটি। এছাড়া হজ করার স্বপ্ন প্রত্যেক মুসলমানই কমবেশি দেখে থাকে যার কারণে তারা বুঝে উঠতে পারে না কি পরিমান টাকা বা সম্পদ থাকলে হজ করা ফরজ।

কত-টাকা-থাকলে-হজ্ব-ফরজ-হয়
তবে ইসলাম এমন একটি জীবন বিধান যেখানে আল্লাহ তায়ালা সকল কিছুকে সহজ ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। ইসলামে প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপরে হজ্ব ফরজ। তবে যারা হজ কাদের উপর ফরজ এ ব্যাপারে জানতে চান তারা আজকের পোস্টে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে হজ ফরজ হওয়ার আর্থিক মানদণ্ড সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

সূচিপত্রঃ কত টাকা থাকলে হজ্ব ফরজ হয় 

কত টাকা থাকলে হজ্ব ফরজ হয় 

কত টাকা থাকলে হজ্ব ফরজ হয় এটি খুবই একটি কমন প্রশ্ন। কারণ আমরা সবাই জানি হজ করতে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার প্রয়োজন আছে তবে এটা জানা নেই যে কি পরিমাণ টাকা থাকলে হজ করা ফরজ। তবে ইসলামে দৃষ্টিকোণ থেকে হজ তার উপর ফরজ যার সামর্থ্য রয়েছে। কোন ব্যক্তির যদি নেসাব পরিমান সম্পত্তি থাকে তাহলে তার ওপর হজ ফরজ। 

অর্থাৎ কোন ব্যক্তি হজে যাওয়ার মত টাকা থাকে এবং হজ থেকে ফিরে আসার পর তার চলার মত সামর্থ্য থাকে তাহলে তার উপর হজ ফরজ। আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ করেছেন তেমনি হজ প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপরে ফরজ। অর্থাৎ যার টাকা আছে সম্পত্তি আছে তার ওপর নামাজ ও হজ উভয় ফরজ। কিন্তু যার টাকা নেই কিছুই নেই তার উপর হজ ফরজ নয়, তবে নামাজ ফরজ।

হজ ওই ব্যক্তির উপর ফরজ যার হজে যাওয়ার যাবতীয় খরচ পরিবহন করার সামর্থ্য আছে হজ থেকে আসার পরে বা পরিবারের জন্য অতিরিক্ত অর্থ সঞ্চয় রয়েছে তার ওপর হজ্জ ফরজ। হজে যাতায়াত থাকা-খাওয়া যাবতীয় খরচ বহন করার সামর্থ্য যাদের থাকবে তারাই হজ করতে পারবেন। তবে যাদের জমি আছে তারা জমি বিক্রি করে হজ করতে পারেন। 

আরো পড়ুনঃ ঈদুল আযহা ২০২৫ কত তারিখ বাংলাদেশ

সহজ ভাষায় বলতে গেলে যদি কারো নিজের ও তার পরিবারের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণের পর হজের খরচ বহন করার সামর্থ্য রয়েছে তবে তার ওপরই হজ ফরজ। সূরা আল ইমরান এ বলা হয়েছে "মানুষের উপর আল্লাহর জন্য হজ করা ফরজ যদি কারো সেখানে যাওয়ার সমর্থ্য থাকে"।

তবে হজ্জ সবার উপর ফরজ নয়, যদি কারো সামর্থ্য না থাকে কিন্তু নিয়ত আছে যেভাবেই হোক হজের খরচ জোগাড় করে সে হজে যাবে তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তার হজ্ব কবুল করবেন। কারণ এরকমও দেখা যায় যে দিনমজুর করে অথবা অনেক কষ্ট করে হজের টাকা জোগাড় করেছে যেখানে সে এক বেলা খেয়ে টাকা সঞ্চয় করে রেখেছে একমাত্র হজের নিয়তে। মক্কা-মদিনা যাওয়া বেশিরভাগ ঈমানদার মুসলিমের ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা থাকে।

ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে হজ্ব ফরজ হওয়ার শর্ত 

ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে হজ ফরজ হওয়ার শর্ত জানা একজন মুসলমান এর জন্য অত্যন্ত জরুরী। কারণ আমরা সবাই জানি ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত। তাহলে হজ এ পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম একটি। আর ফরজ বলতে আমরা কি বুঝি, ফরজ বলতে আসলে বোঝানো হয়েছে অবশ্য পালনীয় অর্থাৎ যেটা পালন না করলে গুনাহ হয় আর পালন করলে নেকি হয়।

  • কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে যেগুলো অবশ্যই জানা জরুরী। চলুন নিচে হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত সমূহ তুলে ধরা যাক। 
  • হজ কেবলমাত্র মুসলমানের উপর ফরজ। কোন অমুসলিমের উপরে হজ ফরজ নয়। অর্থাৎ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য হজ ফরজ। 
  • হজ পালনকারীকে অবশ্যই বালেগ হতে হবে অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্ক। প্রাপ্ত বয়স্ক না হলে হজ ফরজ হয় না অর্থাৎ ১৫ বছরের উর্ধ্বে হলে তার ওপর হজ ফরজ। অর্থাৎ যখন একটি মানুষ শারীরিক পূর্ণতা এবং মানসিক পরিপক্কতা লাভ করে তখন তার উপর হজ ফরজ। 
  • মানসিক বুদ্ধি সম্পন্ন এবং সম্পূর্ণ সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ হলে সে হজ্ব হজ করার উপযুক্ত বলা যায়। 
  • যদি কোন ব্যক্তি নিজ স্বাধীন হয় অর্থাৎ অন্যের অধীনে না থাকে অর্থাৎ ইতিহাস অনুযায়ী আগে দাসত্ব বা কারাবন্দি থাকতো তাদের উপর হজ ফরজ নয়। সম্পূর্ণ স্বাধীন ফ্রী তার ওপর হজ্ব ফরজ।
  • আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান এবং শারীরিক সামর্থ্য থাকা ভালো। অর্থাৎ এমন কোন ব্যক্তি যার হজে যাওয়ার যাবতীয় খরচ বহন করতে পারবে এবং নিজ এবং পরিবারের জন্য অতিরিক্ত টাকা থাকবে। 

মানব জীবনে হজ কতবার ফরজ 

মানব জীবনে হজ কতবার ফরজ এ ব্যাপারে অনেকেই জানেনা। অনেকেই ধন-সম্পদ চালিয়ে হওয়ার কারণে দুই-তিন বার হজ করে কিন্তু সে নিজেই জানে না একজন মানুষের উপর হজ কতবার ফরজ হয়। ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলা যাই একজন মুসলিমের জীবনে হজ কেবল একবারই ফরজ হয়। রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন "হজ একবার ফরজ এরপর কেউ অতিরিক্ত করলে সেটা নফল হজ হবে"-(মুসলিম হাদিস: ১৩৩৭)।

তবে সামর্থ্য যাদের আছে তারা অবশ্যই যত ইচ্ছা তত হজ করতে পারেন। তবে একবার হ করার পরে পরবর্তী হজ ওমরাহ্ হিসেবে ধরা হয়। তবে তিনি যতবার হজ করবেন ততবারই নেকি পাবেন। হজ এমন একটি ইবাদত যেখানে গিয়ে আপনি মনের সকল আশা আকাঙ্ক্ষা নিজের কর্মের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে পারবেন।

অনেকেই আছেন যারা একবার হজ করার পর তার দ্বারা কোন পাপ হয়ে গেলে আবার হজ করতে যান মনে করেন হজে গেলে সব মাফ হয়ে যাবে এমনটি করা উচিত নয়। হজ একটি পবিত্র জিনিস আল্লাহ প্রদত্ত প্রত্যেক সমর্থন ব্যক্তির উপর হজ্ব ফরজ করেছেন আজ ফরজ কাজ নিয়ে কখনো হাসি তামাশা করা উচিত নয় এটা প্রত্যেকের মাথায় থাকা উচিত।

কত টাকা থাকলে হজ্ব ফরজ হয় এ সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর 

প্রশ্ন: হজের জন্য সর্বনিম্ন খরচ কত? 

উত্তর: ২০২৫ সালের সরকারি প্যাকেজ আনুমানিক ৭-৮ লাখ টাকা থেকে শুরু।

প্রশ্ন: ঋণ থাকলে কি হয ফরজ হয়? 

উত্তর: না, সর্বপ্রথম ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

প্রশ্ন: জমি বিক্রি করে হজে যাওয়া জরুরী কি? 

উত্তর: যদি হজ ফরজ হয়, তবে বিক্রি করে যাওয়া বৈধ ও জরুরী হতে পারে।

প্রশ্ন: সোনা গহনা থাকলে কি হজ ফরজ? 

উত্তর: বিক্রয় যোগ্য সোনা অতিরিক্ত থাকলে হজ ফরজ হয়।

প্রশ্ন: হজে যাওয়ার জন্য টাকার উৎস কি হতে পারে? 

উত্তর: চাকরি, ব্যবসা, সঞ্চয়, উপহার, বৈধ অনুদান, সম্পত্তি ইত্যাদি

২০২৫ সালের হজের আনুমানিক খরচ 

২০২৫ সালের হজের আনুমানিক খরচ যারা জানেন না তারা আজকের পর থেকে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। কারণ এখন জিলকদ মাস চলছে আগামী জিলহজ্জ মাসের ৮ তারিখ থেকে হজের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে অর্থাৎ ৪/৫ জুন ২০২৫ তারিখে থেকে হজের কার্যক্রম আরম্ভ হবে। বাংলাদেশ থেকে হজের বিভিন্ন প্যাকেজ রয়েছে। 

তবে সরকারি ভাবে গেলে খরচ কিছুটা কম লাগে এবং বেসরকারিতে খরচ একটু বেশি। যারা সরকারিভাবে হজে যেতে চান তাদের থাকা খাওয়া যাতায়াত প্রশিক্ষণ বিভিন্ন কার্যক্রম বাবদ ৭-৮ লক্ষ টাকা লাগতে পারে। আবার বেসরকারিভাবে গেলে বিভিন্ন খরচ অনুযায়ী এবং বিভিন্ন হজ এজেন্সি অনুযায়ী টাকা নির্ধারিত হয়।

তবে বেসরকারিভাবে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ১১ লক্ষ টাকা প্রায়ই লাগতে পারে। তবে এই টাকার মধ্যে থাকা, খাওয়া, কোরবানি করা, পরিবহন বিমান ভাড়া, এজেন্সি ফি সকল আনুষঙ্গিক খরচ নির্ভর করে। যারা হজ করতে চান তারা অবশ্যই পরিবারের খরচ বাদে হজের খরচ বহন করার ক্ষমতা থাকতে হবে।

কুরআন ও হাদিসের আলোকে হজের গুরুত্ব 

কুরআন ও হাদিসের আলোকে হজের গুরুত্ব অনেক। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি। আজকের মত মুসলমানের ওপর ফরজ করা হয়েছে। তবে প্রত্যেক মুসলমানের ওপর এটি ফরজ নয়। মাত্র যাদের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে তাদেরই হজ ফরজ। আল্লাহতালা অতিরিক্ত কোন কিছু তার বান্দার উপর চাপিয়ে দেননি। তিনি মহান দয়ালু এবং ন্যায় বিচারক।

কত-টাকা-থাকলে-হজ্ব-ফরজ-হয়
কোরআনে (সূরা আল ইমরান: ৯৭ আয়াতে) বর্ণিত আছে এবং মানুষের ওপর আল্লাহর জন্য এই ঘরের হজ করা ফরজ যদি কারো সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য থাকে আর কেউ অস্বীকার করলে (হজ না করে), তাহলে আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টি থেকে অমুখাপেক্ষী।

আরো পড়ুনঃ ইসলামিক নামের অর্থসহ মেয়েদের সুন্দর নাম

এবং হজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে রাসুল (সাঃ) বলেছেন "যে ব্যক্তি হজ করল এবং অশ্লীল বা গুনাহে লিপ্ত হলো না, সে সেদিন এমন ভাবে ফিরে আসে যেন তার সব গুনাহ মাফ হয়ে গেছে"-(বুখারী: ১৫২১, মুসলিম: ১৩৫০)। তাই সকালে আলোচনা সাপেক্ষে বলা যায় হজ একমাত্র সেই ব্যক্তির উপর ফরজ করা হয়েছে যার হজে যাওয়ার সমর্থ্য রয়েছে এবং যথেষ্ট পরিমান সম্পদ রয়েছে।

হজের গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত সমূহ 

হজের ফজিলত অনেক যা বলে শেষ করা যাবে না। হজ করলে একজন মানুষ শিশুর ন্যায় বা মায়ের গর্ব থেকে নতুন ভাবে ভূমিষ্ঠ হয় অর্থাৎ সকল পাপ মুছে গিয়ে নিষ্পাপ শিশুর মত হয়ে যায় এ ধরনের বোঝানো হয়েছে। চলুন হাজার গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত সমূহ তুলে ধরার চেষ্টা করি। কারণ যারা হজে যেতে চান কিন্তু তার ফজিলত সম্পর্কে এখন ও অবগত রয়েছেন তারা আজকের পোস্ট থেকে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।

  • যদি একজন মুসলিম হালাল টাকায় সঠিকভাবে হজ পালন করেন এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখেন তাহলে আল্লাহ হজের পরিবর্তে তার পূর্বের সকল ছোট বড় গুনাহসমূহ মাফ করে দেন।
  • যারা জান্নাত লাভের আশায়, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় এবং নিজের গুনাহ মাফের জন্য হজ পালন করে আল্লাহ তাদের প্রতিদান হিসেবে জান্নাত দেবেন।
  • এছাড়া হজের মাধ্যমে কেবলমাত্র আরাফার দিনে, আরাফার ময়দানে আল্লাহর কাছে মনের আর্জি পেশ করা যায় এবং আরাফাত দিনে আল্লাহতালা তার বান্দার সকল গুনাহ মাফ করে দেন। অর্থাৎ আরাফাত দিন গুনহা মাফের দিন বলা হয়। 
  • এজন্য হাদিসের বলা হয়েছে আরাফার দিনের চেয়ে উত্তম কোন দিন নেই, যেদিন আল্লাহ বেশি সংখ্যক বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন।
  • এই হজের মাধ্যমে গোটা বিশ্বের মুসলমানরা একত্রিত হয় এবং একই ধরনের সাদা পোশাক পড়ে হজ পালন করে যা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য গর্বের এবং ঐক্যের সৃষ্টি করে।
  • একমাত্র হজের মাধ্যমেই মানুষের মনের অহংকার বর্জন করা সম্ভব এবং ধৈর্য ও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট ও আত্মসমর্পন করার সুযোগ রয়েছে।
  • তাই হজের ফজিলত অনেক যারা নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে চান এবং খাটে ঈমানদার হিসেবে গড়ে তুলতে চান তারা কষ্টসাধ্য হলেও হজ্জ করার নিয়ত করতে পারেন। 
  • অর্থাৎ হজ এমন একটি ইবাদত যার মাধ্যমে দুনিয়ার সকল গুনাহ মাফ চাওয়ার সুযোগ রয়েছে এবং জান্নাত লাভের জন্য আল্লাহর কাছে চাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া হজ করতে গিয়ে কেউ মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব দেন।

আরবি মাসের কত তারিখে হজ পালিত হয়

আরবি মাসের কত তারিখে হজ পালিত হয় এ বিষয়ে জানার প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই রয়েছে। কারণ একজন মুসলিম হিসেবে যদি হজ কখন পালাতে হয় এবং কত টাকা থাকলে হজ্ব ফরজ হয় এ ব্যাপারে যদি সঠিক জ্ঞান অর্জন না করতে পারেন তাহলে মুসলিম জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। আরবি ক্যালেন্ডার এর ১২ তম জিলহাজ মাসের ৮ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত হজের কার্যক্রম চলে। 

  • জিলহজ মাসের ৮ তারিখ থেকে যেহেতু হজ এর কার্যক্রম শুরু হয় এই দিনে হাজিরা মিনাতে গিয়ে রাত যাপন করে থাকেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে থাকেন।
  • ৯ জিলহজ আরাফাত দিন। হজ পালন এর সময় সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন হচ্ছে আরাফা দিন। এই দিনে হজের খুতবা হয় এবং দোয়া করে সকল হাজিরা আরাফাত ময়দানে অবস্থান করে। এবং সন্ধ্যার পরে মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার সালাত আদায় করে সেখানেই রাত কাটাতে হয়।
  • ১০ই জিলহজ্জ হচ্ছে কোরবানির দিন। এদিন প্রত্যেক হাজী কুরবানী করে আল্লাহর নামে। এরপর শয়তানকে ৭ টি পাথর নিক্ষেপ করা হয়। এবং ছেলে-মেয়ে উভয় চুল কাটতে হয়। তবে ছেলেদের সম্পূর্ণ মাথা মুন্ডন করতে হয় এবং মেয়েদের সামান্য পরিমাণ চুল কাটতে হয়। এবংp কাবা শরীফ বা বাইতুল্লায় তাওয়াফ করা হজের অন্যতম রোকন। 
  • ১১ জিলহজ মিনাতে অবস্থান করতে হয় এবং দিনের বেলায় আবার সাতটি ছোট, মাঝারি, বড় পাথর শয়তানকে নিক্ষেপ করতে হয়। মিনাতে রাত যাপন করতে হয়। 
  • ১২ জিলহজ আবারো সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করতে হয় শয়তানকে। এবং সেই দিন মিনা ত্যাগ করা যায়। 
  • ১৩ জিলহজ যারা মিনা থেকে চলে যান তারা আবার ৭ টি করে পাথর নিক্ষেপ করতে হয় শয়তানকে, এরপর মিনা ত্যাগ করে মক্কায় ফিরে আসতে হয়।

অর্থাৎ এভাবে সকল হজের কার্যক্রম সঠিকভাবে পালন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায় এবং হজ করার আগে অবশ্যই নিয়ত বিশুদ্ধ অহংকার বর্জন ও বেশি বেশি ইস্তেগফার করা উত্তম। হজের সকল কাজ সঠিক নিয়ম সময় এবং ধারাবাহিকভাবে করা একজন মুসলমানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

হজে যাওয়ার খরচ সম্পর্কিত আরো কিছু (FAQ) প্রশ্নোত্তর 

প্রশ্ন: একবার হজ করলে কি আবার ফরজ হয়? 

উত্তর: না, একবার যথাযথ ভাবে আদায় করলে হজ, আর ফরজ হয় না।

প্রশ্ন: মহিল মহিলা হলে পরিবারের খরচ বাদ দিয়ে হজ ফরজ হয়? 

উত্তর: হ্যাঁ, কিন্তু তার সঙ্গে মাহরাম পুরুষ থাকাও শর্ত।

প্রশ্ন: হজের জন্য নিবন্ধনের সময় কি পরিমাণ টাকা জমা দিতে হয়? 

উত্তর: সরকারি প্যাকেজে গেলে আনুমানিক ২-৩ লক্ষ টাকা অগ্রিম জমা দিতে হয়।

প্রশ্ন: হজ না করে টাকা দান করলে কি হবে? 

উত্তর: আজ ফরজ হলে, তা না করে দান করলেও গুনাহ হবে -  হজের টাকায় হজ আদায় করতে হবে।

প্রশ্ন: হজ ফরজ কি শুধু ধনীদের জন্য? 

উত্তর: না, বরং সমর্থ্যবানদের জন্য, দরিদ্র হলে ফরজ নয়।

শেষ মন্তব্যঃ কত টাকা থাকলে হজ্ব ফরজ হয় 

আজকের পোস্টে হজের খরচ এবং হজ্জ এর গুরুত্ব ও ফজিলত ও হজের সময় কোরবানি করা ঈদুল আযহা পালন করা ইত্যাদি সকল বিষয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। হজ প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের উপর ফরজ তবে যার সম্পদ থেকেও হজ পালন করলো না আল্লাহ তার অমুখাপেক্ষী। আল্লাহ গাফেল ব্যক্তিকে অর্থাৎ যিনি বোঝেন কিন্তু না বোঝার ভান করে থাকেন তাকে কখনোই পছন্দ করেন না।

কারণ আল্লাহ তাকে সম্পত্তি মানে এই নয় যে বিলাসিতায় কাটাতে হবে, অবশ্যই সম্পত্তির কিছু অংশ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে আল্লাহকে খুশি করতে হবে। আর সেই ব্যক্তি হজ করতে পারেন যার পারিবারিক খরচ বহন করার পাশাপাশি হজের খরচ বহন করার সামর্থ্য রয়েছে। তবে কারো যদি সম্পত্তি থাকে সে সম্পত্তি বিক্রয় করে কিছু অংশ পরিবারের জন্য রেখে বাকি অংশ দিয়ে হজ করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url