টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম-টাফনিল এর কাজ কি
টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম কি সকলে জানে? টাফনিল এক ধরনের ব্যাথা নাশক ওষুধ যা হয়তো অনেকেই খায় আবার অনেকেই এর নাম এখনো শুনেনি। তবে প্রত্যেকের যদি এই ঔষধ সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে অবশ্যই এটি সেবনের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে পারবে।
সূচিপত্রঃ টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম
- টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম
- টাফনিল এর কাজ কি
- টাফনিল ২০০ ব্যবহারের উপকারিতা
- টাফনিল খাওয়ার সময় যেসব সতর্কতা মানতে হবে
- টাফনিল ২০০ খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
- গর্ভবতী ও স্তন দানকারী মায়েদের নিরাপদ কিনা
- শিশুদের টাফনিল খাওয়ার নিয়ম
- বয়স্কদের জন্য টাফনিল ২০০ এর ডোজ
- টাফনিল ২০০ ওষুধের দাম কত
- টাফনিল অন্য ওষুধের সাথে খেলে কি হয়
- নীল সংরক্ষণের সঠিক নিয়ম
- টাফনিল ঔষধ সম্পর্কিত FAQ প্রশ্নোত্তর
- শেষ মন্তব্যঃ টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম
টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম
টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম এবং এর ডোজ সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। তবে যেহেতু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ তাই খাওয়ার বা সেবন বিধির সঠিক নিয়ম জানা অত্যন্ত জরুরী। শুধু টাফনিল ওষুধ খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে তা নয় যত ধরনের ওষুধ কিংবা মেডিসিন আছে সকল ঔষধ খাওয়ার নিয়ম অবশ্যই জানতে হবে এবং মেনে চলতে হবে।
তবে সর্বপ্রথম আমাদের জানতে হবে টাফনিল ২০০ আসলে কিসের ঔষধ? টাফনিল ওষুধটি মূলত ব্যাথা নাশক এক ধরনের ওষুধ বিশেষ করে মাইগ্রেনের ব্যথা, মাথাব্যথার জন্য ব্যবহৃত হয়। যারা এই ওষুধটি সেবন করেন কিন্তু সঠিক নিয়ম জানেন না তাদের জন্য আজকের পোস্টটি খুবই হেল্পফুল হবে। চলুন এবার সঠিক খাওয়ার নিয়ম গুলো নিচে তুলে ধরার চেষ্টা করি।
- একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য টাফনিল ২০০ mg ট্যাবলেটটি দিনে কখনো একবার আবার কখনো দুইবার খাওয়া যায়। তবে এটি নির্ভর করবে আপনার রোগের ধরনের উপর।
- আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা নাকি এমনিতেই কোন কারনে মাথাব্যথা এটি আগে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করার পরে চিকিৎসকরা এই ওষুধটি খাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। এবং রোগের তীব্রতা এবং ধরনের অপর নির্ভর করে ডাক্তারেরা ডোজ নির্ধারণ করে থাকেন।
- এবং নির্দিষ্ট সময়ে পর এই ওষুধ খাওয়ার ডোজ পরিবর্তন করার প্রয়োজন হতে পারে তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে টাফনিল ওষুধটি সেবন করতে হবে।
- ডাক্তারেরা এই ওষুধটি খাওয়ার ডোজ কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ দিন আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ৭ দিন দিয়ে থাকে। তবে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী অবশ্যই খাওয়া উচিত। অনেক ক্ষেত্রে গুরুতর সমস্যা এর ক্ষেত্রে এ ওষুধ খাওয়ার সময় বৃদ্ধি হতে পারে অর্থাৎ ৭ দিনের বেশিও খেতে হতে পারে।
- এই ওষুধটি শিশুদেরও খাওয়ানো যায় তবে বয়স এবং রোগের ধরন অনুযায়ী রোজ নির্ধারণ করে দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
- এই ওষুধটি খেতে হবে অবশ্যই খাবার খাওয়ার পরে। কারণ ভরা পেটে খেলে পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- এছাড়া প্রত্যেক ঔষধ খাওয়ার নিয়ম আছে সেটি হল প্রতিদিন একই সময়ে আপনি ওষুধটি সেবন করবেন। যদি রাতে ১০ টার দিকে খান তাহলে তারপরের দিন রাতে ঠিক একই সময় ১০ টাতেই খেতে হবে, তাহলে এর কার্যকারিতা ঠিক থাকে।
- যদি কোনো কারণবশত ওষুধটি খেতে ভুলে যান তাহলে যথাসম্ভব দ্রুত খেয়ে নিন। কিন্তু যদি আপনার পরবর্তী ডোজ খাওয়ার সময় হয়ে যায় তাহলে আগের ডোজ খাবেন না অর্থাৎ একসাথে দুইটা ওষুধ খাওয়া যাবেনা।
টাফনিল এর কাজ কি
টাফনিল এর কাজ কি এ ব্যাপারে গুগলে কিংবা ইউটিউবে বিভিন্নভাবে সার্চ করে থাকেন জানার জন্য। টাফনিল খুবই কার্যকরী একটি ওষুধ যা বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা নাশক হিসেবে কাজ করে। প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এক ধরনের উপাদান যা শরীরের ব্যথা, ফুলে যাওয়া ও জ্বরের কারণে হয়। মূলত এই উপাদানটি শরীর থেকে কমানোর জন্য টাফনিল ২০০ ওষুধটি খাওয়া হয়।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর দাম
টাফনিল এর কাজ
- মাইগ্রেনের ব্যথা, মাথা ব্যথা, পিঠের ব্যথা, মেরুদন্ডের ব্যথা, জয়েন্টের ব্যথা, দাঁতের ব্যথা ইত্যাদি কমাতে ব্যবহৃত হয়।
- অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অপারেশন বা সার্জারির পরে অস্ত্র প্রচারের কারণে ব্যথা হয় আর এই ব্যথা কমানোর জন্য চিকিৎসকরা টাফনিল ওষুধটি সাজেস্ট করে থাকেন।
- শরীরের মাংসপেশির ব্যথা এবং বাত/gout এর ব্যথা উপশম করতে ব্যবহৃত হয়।
- শরীরে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমনের জন্য জ্বর হলে জ্বর কমাতে সহযোগিতা করতে পারে।
- শরীরের ভিতরে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে টাফনিল খুবই কার্যকরী। অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়া নিরাময়ে এটি দ্রুত সাহায্য করে।
- ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, টনসিলের সংক্রমণ এ ছাড়াও গলা ব্যথা ইত্যাদি রোগের ঔষধ হিসেবে কার্যকরী।
- প্রস্রাব/মূত্রনালীর ইনফেকশন হলে চিকিৎসকরা টাফনিল ওষুধটি দিতে পারেন।
- ব্যাকটেরিয়া জনিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন চামড়াতে ঘা, ফোঁড়া, ইনফেকশন ইত্যাদি সারানোর জন্য এ ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
- বয়স্কদের বয়স বাড়লে অনেক সময় হাড়ের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা করে অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়ার কারণে এ ধরনের ব্যথাগুলো হয়ে থাকে তাই এ সকল রোগ সংক্রমণে টাফনিল খুবই কার্যকরী।
- অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়াজনিত বিভিন্ন সংক্রমণ যেমন মূত্রনালী, শ্বাসতন্ত্র,হার, ত্বক, পাকস্থলী ইত্যাদি সংক্রমণে টাফনিল ব্যবহৃত হয়।
টাফনিল ২০০ ব্যবহারের উপকারিতা
টাফনির ২০০ খাওয়ার উপকারিতা অবশ্যই রয়েছে। টাফনিল ওষুধটি সবচাইতে ভালো বেশি চেনে যাদের বিভিন্ন ধরনের ব্যথার উপশম রয়েছে তারা। কারণ এটি একটি ব্যথা নাশক, ঔষধ আর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হয়। খুবই কার্যকরী একটি ওষুধ। টাফনিল ওষুধ ব্যবহৃত হয় শরীরের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হ্রাস করার জন্য।
কারণ ব্যাকটেরিয়ার কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দেখা দেয় যেমন গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা, প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া, বিভিন্ন ধরনের ফোড়া, ঘা, ইনফেকশন, হাড় ও জয়েন্টের ব্যথা, পাকস্থলীতে ও অন্ত্রের কিছু ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ কমাতে, সাইনোসাইটিস এর চিকিৎসায় নাক কান গলার সংক্রমণ চিকিৎসায় দাঁতের ব্যথায় ডেন্টাল ইনফেকশন আমার তো বিশেষভাবে টাফনিল ২০০ ওষুধটি ব্যবহার করা হয়।
টাফনিল খাওয়ার সময় যেসব সতর্কতা মানতে হবে
টাফনিল যেহেতু একটি ব্যথা নাশক ঔষধ তাই এটি খাওয়ার সময় অবশ্যই কিছু গ্রহণযোগ্য সতর্কতা মেনে চলতে হবে। যেকোনো ধরনের মেডিসিন খাওয়ার আগে কিংবা পরে কিছু সতর্কতা মেনে খেতে হয় এছাড়া ভালো হওয়ার পরিবর্তে অনেক বড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ বড় বড় মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ঔষধ ছাড়া যদি অসুখ সারানো যায় তাহলে সে পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত।
কারণ রোগ সারানোর জন্য মেডিসিন ব্যবহার করতে হবে এর কোন মানে নাই। সঠিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ এড়াতে সাবধানতা অর্জন করে চলতে হবে। অতিরিক্ত মেডিসিন খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মেডিসিন রোগ সারার পরিবর্তে শরীরের ভেতরে অনেক ধরনের রোগ সৃষ্টি করে থাকে তাই যেকোনো মেডিসিন খাওয়ার আগে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
আরো পড়ুনঃ জাফরান দুধ খাওয়ার নিয়ম ও দৈনন্দিন পুষ্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস
- প্রথমত টাফনিল ২০০ খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সু পরামর্শ মেনে চলতে হবে। নিজে থেকে এই ওষুধের ডোজ গ্রহন করা উচিত নয়।
- টাফনিল খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় ডোজ গ্রহণ করা উচিত। কারণ দোস্ত এর পরিমাণ যদি বেশি হয় তাহলে কিডনি লিভার কিংবা পাকস্থলীতে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- ব্যাথা নাশক ওষুধ খালি পেটে খাওয়া উচিত নয় তাই প্রত্যেকবার খাবার পরে টাফনিল খেলে ওষুধের কার্যকারিতা ঠিক থাকে।
- টাফনিল ঔষধ যখন খাওয়া হয় তখন কোন ধরনের ধূমপান কিংবা অ্যালকোহল খাওয়া যাবে না। এতে ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হয় এবং বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
- টাফনিল খাওয়ার আগে যদি অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে থাকেন এবং শরীরের চামড়ায় এলার্জিজনিত রাস কিংবা চুলকানি, শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন এবং জানাবেন।
- টাফনিল দীর্ঘমেয়াদে খাওয়া উচিত নয় কারণ পরবর্তীতে এই ওষুধটি শরীরে কাজ না করার সময় না থাকে।
- যাদের কিডনির লিভার কিংবা শরীরের অন্যান্য বড় ধরনের সমস্যা থাকে তাদের এই বছর সর্তকতা সাথে খেতে হবে অর্থাৎ অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে হওয়া উচিত।
- গর্ভবতী মহিলা এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের টাফনিল খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি এছাড়া শিশুদের এই ওষুধটি কোনভাবেই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া দেওয়া যাবে না।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধটি সেবন করতে হবে কারণ কোর্স সম্পূর্ণ না হলে সংক্রমণ কমানো সম্ভব নয় অর্থাৎ পরবর্তীতে আবার সংক্রমণ ফিরে আসতে পারে।
- অন্য কোন ওষুধের সাথে টাফনিল খাওয়া যাবে কিনা অবশ্যই ডাক্তারকে পরামর্শ নিতে হবে।
টাফনিল ২০০ খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
টাফনিল ব্যথা নিরাময়ে ব্যবহার করা হয় তাই এটি খাওয়ার আগে অবশ্যই কিছুই নিয়ম মান্য করা এবং সাবধানতার জন্য করা উচিত। কারণ যেকোনো ধরনের ওষুধ নিয়ম মেনে না খেলে অনেক ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে যা মৃত্যু হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে তাই কোন ধরনের রিস্ক না নিয়ে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চলুন টাফনিল ২০০ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো কি কি জেনে নেয়া যাক।
- অনেক ক্ষেত্রে মাথা ঘোরা এবং বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে
- পাতলা পায়খানা/ ডায়রিয়া
- পেটের মধ্যে অস্বস্তি বা পেট ব্যথা
- ক্ষুধা মন্দা বা ক্ষুধা কমে যাওয়া
- মুখ ঘন ঘন শুকিয়ে যাওয়া
- হালকা চুলকানি কিংবা রাশ
- শরীরে ক্লান্তি ও দুর্বলতা দেখা দিতে পারে
- চোখে সব সময় ঘুম ঘুম ভাব
- ত্বক লালচে হতে পারে
- বুকের মধ্যে ধড়ফড় এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে
- শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া
- ত্বক ও চোখ হলদেটে হওয়া
অর্থাৎ এলার্জি কিংবা শ্বাসকষ্ট গলা ব্যথা অতিরিক্ত মাংসপেশিতে ব্যথা দেখা দিলে অবশ্যই ভালো বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিতে হবে। কারণ একেক ধরনের ওষুধের একক ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তাই কোন বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হবেন।
টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন: টাফনিল কি একসাথে দুইটা খাওয়া যায়?
উত্তর: না, হলে পাকিস্তানে গুরুতর সমস্যা হতে পারে।
প্রশ্ন: টাফনিল খাওয়ার পর কি গাড়ি চালানো নিরাপদ?
উত্তর: সাধারণত সমস্যা হওয়ার কথা নয়, তবে মাথা ঘোরা কিংবা যেমনি হলে গাড়ি চালানো ঠিক হবে না।
প্রশ্ন: টাফনিল খেলে কি গ্যাস্ট্রিক হতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, এটি একটি সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। কারণ ব্যথা আসুক ওষুধ খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
প্রশ্ন: টাফনিল কি জ্বর কমায়?
উত্তর: হ্যাঁ, কিছু ক্ষেত্রে জ্বর কমাতে সাহায্য করতে পারে।
প্রশ্ন: গর্ভবতী মহিলাটা আপনি খাওয়া নিরাপদ কি?
উত্তর: সাধারণত গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি সুপারিশ করা হয় না।
গর্ভবতী ও স্তন দানকারী মায়েদের নিরাপদ কিনা
প্রসূতি কিংবা গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভকালীন সময়ে অনেক ধরনের জটিলতা থাকে তাই এ সময়ে কোন ধরনের ওষুধ সেবন করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। কারণ প্রত্যেকটা ওষুধের কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে আর ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খেলে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চলুন টাফনিল ওষুধটি গর্ভবতী ও স্তন দানকারী মায়েদের জন্য নিরাপদ কিনা আলোচনা করি।
বেশিরভাগ ডাক্তাররা গর্ভাবস্থায় এন্টিবায়োটিক সেবন করা থেকে বিরত থাকতে বলেন। কারণ এ সময়ে কোন ধরনের এন্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত নয়। টাফনিল ২০০৬ ওষুধটি খাওয়ার ফলে গর্ভের শিশুর ওপরে বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলতে পারে অর্থাৎ প্রথম ৩ মাস গর্ভাবস্থায় কোন ওষুধ খাওয়া উচিত নয় অতিরিক্ত প্রয়োজন ছাড়া। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মায়েদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকির চেয়ে শিশুর ঝুঁকি অনেক ক্ষেত্রে বেশি এবং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ দাঁতের রুট ক্যানেল করতে কত টাকা লাগে
আর এই সময় কোন ধরনের ব্যাথা নাশক কিংবা এন্টিবায়োটিক খাওয়া কোনভাবেই উচিত নয়। গর্ভবতী নারীরা কেবলমাত্র অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অর্থাৎ প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী খেতে পারেন। এছাড়া যারা শিশুদের দুধ খাওয়ান সে সকল নারীদের টাফনিল ২০০ খেলে অনেক ক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধের সাথে শিশুদের শরীরে চলে যায়, যার কারণে শিশুরা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং হজমের সমস্যা দেখা দেয়।
এছাড়াও শিশুদের অনেক ক্ষেত্রে এলার্জি বেড়ে যেতে পারে, ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে যদি ওষুধটি খেতেই হয় তাহলে অবশ্যই শিশুদের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। প্রসূতি মহিলারা কিংবা স্তন দানকারী মায়েরা কোনভাবেই নিজেরা টাফনিল খাওয়ার চেষ্টা করবেন না ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া। অবশ্যই সব ঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করে এবং যদি চোখের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
শিশুদের টাফনিল খাওয়ার নিয়ম
শিশুদের টাফনিল খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নাই। সাধারণত শিশুদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে এবং শিশুর ওজন অনুযায়ী ডাক্তাররা দিয়ে থাকেন। যেহেতু এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ তাই শিশুদের খাওয়ানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে শিশুদের খাওয়াতে হলে অবশ্যই খাবার খাওয়ার পরে খাওয়ালে সবচাইতে ভালো হয় পেটের প্রবলেম কম হয়।
শিশুদের যদি টাফনিল ট্যাবলেট খাওয়ানো হয় এবং সেটি যদি সহ্য করতে না পারে তাহলে শিশুদের উপযোগী ডাক্তারদের পরামর্শ নিয়ে সাসপেনশন/সিরাপ পাওয়া যায় সেটা দিতে পারে। খাওয়ানোর পরে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা যেমন চুলকানি, মাথা ঘোরা, ডায়রিয়া, পেট ব্যথা ইত্যাদি।
বয়স্কদের জন্য টাফনিল ২০০ এর ডোজ
বয়স্কদের জন্য টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম ও এর ডোজ অবশ্যই রয়েছে। রোগের ধরন অনুযায়ী টাফনিল ওষুধটি ডাক্তারেরা ডোজ দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে শরীরের অবস্থা, সংক্রমণের তীব্রতা এবং রোগের ধরন অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য টাফনিল ২০০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট টি দিনে ১/২ বার খাওয়ানো যেতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রে রোগের ধরন অনুযায়ী ৩ বার খাওয়ানো যেতে পারে।
তবে যাদের তীব্র মাথাব্যথা কিংবা মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য টাফনিল ২০০ mg ট্যাবলেটটি যাদের প্রথম উপসর্গ দেখা দেয় তাদের জন্য ডাক্তারেরা নির্ধারণ করে দেন। কারণ মাইগ্রেনের প্রথম উপসর্গ দেখা দিলে ওষুধ সেবনের ১-২ ঘন্টা পরে আবার উপসর্গ বা ব্যথা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে ডোজ গ্রহণ কিছুটা ঘন ঘন দিতে পারে।
টাফনিল ২০০ ওষুধের দাম কত
টাফনিল ২০০ mg ট্যাবলেটটি মূলত SKF ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড এর একটি ঔষধ। এই ওষুধটি বিভিন্ন জায়গায় দাম ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তবে বাংলাদেশের বেশিরভাগ জায়গায় ডিস্পেন্সারিগুলোতে এ ওষুধটি পার পিস ১০ টাকা। তবে কোন কোন জায়গায় কিংবা বড় পাইকারি দোকানগুলোতে ৯ টাকা দাম নিতে পারে। একটি ট্যাবলেট ১০ টাকা করে হলে একপাতা অর্থাৎ ১০ টি ট্যাবলেটের দাম প্রায় ১০০ টাকা। যদি এক বক্স কিনবা বড় প্যাক নিতে পারেন তাহলে দাম কিছুটা কম রাখতে পারে।
টাফনিল অন্য ওষুধের সাথে খেলে কি হয়
টাফনিল ২০০ ওষুধটি টলফেনামিক অ্যাসিড/ (Tolfenamic acid) একটি NSAID (Non-Steroidal Anti-Inflammatory Drug)। বিভিন্ন ব্যাথা, জ্বালাপোড়া, প্রদাহ কমাতে ব্যবহৃত হয়। তাই অন্যান্য ওষুধের সাথে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। কারো শরীরে যদি বড় ধরনের কোন রোগ থেকে থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরে এই ওষুধটি অন্য কোন ঔষধ খাওয়ার সাথে খাওয়ার পরামর্শ নিতে হবে।
- যাদের কিডনির সমস্যা আছে এবং কিডনির প্রতিকারের জন্য ওষুধ সেবন করে থাকেন তাদের টাফনিল ২০০ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- এছাড়া তাদের লিভার জনিত সমস্যা আছে তাদের এ ধরনের ওষুধ খাওয়া উচিত নয় অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
- অনেকে আছেন যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান তাদের খেলে রক্ত পাতলা করার প্রভাব আরো বেড়ে যায়। এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে প্রাণনাশের সম্ভাবনা থাকে।
- ব্যাথা নাশক ওষুধ যেমন Dicklofenac, Naproxen Ibuprofen খেয়ে থাকেন এ সকল ওষুধের সাথে খেলে পেটের গ্যাস্ট্রিক রক্ষা করুন এবং আলসার এর ঝুঁকি বাড়তে থাকে।
- যারা অতিরিক্ত রক্তচাপের ওষুধ খান তাদের টাফনিল ওষুধটি খেলে রক্তচাপ কমানোর ওষুধের কার্যকারিতা ও মেয়ে দেয়। অ্যান্টিসেপটিক ওষুধের সাথে খেলে পেটে এবং অন্ত্রে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
- মানসিক সমস্যার ওষুধের সাথে টাফনিল খেলে রক্তে লিথিয়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।
টাফনিল সংরক্ষণের সঠিক নিয়ম
টাফনিল যেহেতু একটি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যথা নাশক ঔষধ তাই কোনভাবেই অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া কিংবা গরম জায়গায় রাখা যাবে না। অর্থাৎ নাতিশীতোষ্ণ জায়গায় ডাকতে হবে। যেকোনো ধরনের ওষুধ অতিরিক্ত গরমে রাখলে এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। তাই অতিরিক্ত গরম কিন্তু অতিরিক্ত ঠান্ডায় রাখা যাবে না। ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যাবে না।
সাধারণত ওষুধটি সংরক্ষণের জন্য রুমের তাপমাত্রা যদি ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর নিচে থাকে তাহলে সবচাইতে ভালো হয়। এছাড়া রান্নাঘর কিংবা বাথরুম আর জায়গা গুলোতে রাখা যাবে না এর কার্যকারিতা নষ্ট করে ফেলতে পারে। বিভিন্ন পোশাক প্রাণী কিংবা শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। অর্থাৎ শুকনো, পরিষ্কার, অন্ধকার, ঠান্ডা জায়গায় ওষুধটি সংরক্ষণ করতে হবে।
টাফনিল ওষুধ সম্পর্কিত FAQ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: ডায়াবেটিকস রোগীরা টাফনিল খেতে পারেন কি?
উত্তর: খেতে পারেন, তবে অন্য ওষুধের সাথে মিলিয়ে খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রশ্ন: লিভার রোগীদের জন্য টাফনিল কি নিরাপদ?
উত্তর: মোটেও না, লিভারের ক্ষতি আরো বেড়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন: টাফনিল কি অন্য ব্যথার ওষুধের সাথে খাওয়া যাবে?
উত্তর: NSAID ধরনের অন্য ওষুধের সাথে খাওয়া যাবেনা।
প্রশ্ন: টাফনিল কি হার্টের ওষুধের সাথে খাওয়া যায়?
উত্তর: সব সময়ই না, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
প্রশ্ন: টাফনিল কতদিন খাওয়া নিরাপদ?
উত্তর: সাধারণত ৫-৭ সাত দিন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
শেষ মন্তব্যঃ টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম
টাফনিল/Tolfenamic Acid ২০০ mg খুবই পরিচিত একটি ওষুধ। এই ওষুধটি ব্যথা নাশক হিসেবে কাজ করে যেকোনো ধরনের ব্যথা যেমন মাথা ব্যথা মাংসপেশিতে ব্যথা দাঁতের ব্যথা মাইগ্রেনের ব্যথা মাসিকের ব্যথা ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে। তবে জেনে রাখা উচিত এই ওষুধটি কোন স্থায়ী চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয় না সাময়িক ব্যাথার উপশম কমাতে সাহায্য করে।
আজকের পোস্টে টাফনিল ২০০ খাওয়ার নিয়ম ব্যবহার বিধি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সকল কিছু আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যারা এই ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে মনোযোগ সহকারে পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি আপনাদের যথাযথ প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url