কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি ডিম ও বাচ্চা দেয়
সূচিপত্রঃ কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি ডিম ও বাচ্চা দেয়
- কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি ডিম ও বাচ্চা দেয়
- কবুতরের যা চেনার উপায়
- কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক
- গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায়
- মাংসের জন্য কবুতরের জাত
- কবুতর কতদিন পর পর ডিম দেয়
- কবুতরের ডিম নষ্ট হওয়ার কারণ কি
- কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়
- কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি ডিম ও বাচ্চা দেয় সম্পর্কিত (FAQ)
- শেষ মন্তব্যঃ কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি ডিম ও বাচ্চা দেয়
কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি ডিম ও বাচ্চা দেয়
কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি ডিম ও বাচ্চা দেয় এ ব্যাপারে জানতে হলে অবশ্যই কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। চলুন সে ব্যাপারেই আজকে আপনাদের সাথে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করি। অনেকেই কবুতর পালতে পছন্দ করেন, অনেকে আবার কবুতরের ব্যবসা করতে চান, কারণ কবুতর এর ব্যবসা করা বর্তমানে অনেক লাভজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যারা কবুতর পালন করে লাভবান হতে চান তারা দেশি গোলা, গিরিবাজ, জালালী কবুতরগুলো পালন করলে বেশি ভালো হয়। কারণ বাংলাদেশের আবহাওয়ায় যদি দেশী জাতের কবুতরগুলো পালন করা হয় তাহলে দ্রুত বাড়ে, যদি ঠিকমতো পরিচর্যা এবং খাবার খাওয়ানো হয়। অর্থাৎ বলা যায় দেশি কবিতার পালনের সবচাইতে বেশি লাভ জনক।
গোলা কবুতর
গোলা কবুতর দেশি কবুতর গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি জাত। এ জাতের কবুতর গুলো যদি সঠিকভাবে লালন-পালন করা যায় তাহলে খুবই সহজেই লাভবান হওয়া যায়। এই কবুতর গুলো বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে যেমন কালো, ধূসর, বাদামী, সাদা ইত্যাদি। এই কবুতর কোন প্রতিবার ডিম পাড়ার সময় ২ টা করে ডিম দিয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন খাবার এবং শারীরিক ক্ষমতা ভেদে একটা করে দিতেও পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ২ টি করে ডিম পাড়ে।
গোলা কবুতরগুলো বছরে সাধারণত ৮-১০ বার ডিম পাড়ে। তবে ভালোভাবে পরিচর্যা নিলে ১০-১২ বার ডিম দিতেও পারে। সঠিকভাবে পরিচর্যা এবং খাবার খাওয়ালে গোলা কবুতর গুলোর প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এবং এই কবুতর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক অন্যান্য কবুতরগুলোর চাইতে ভালো। তাই শখের বসে কবুতর পালন করা কিংবা ব্যবসার জন্য গোলা কবুতর উপযুক্ত।
হোয়াইট কিং
এটি উন্নত জাতের এক ধরনের কবুতর। যারা কবুতর নিয়ে ব্যবসা করতে চান এবং মাংসল জাত কবুতর খোঁজাখুঁজি করছেন তাদের জন্য ওয়েটিং কবুতর হতে পারে একটি অন্যতম একটি সমাধান। হোয়াইট কিং কবুতরগুলো ব্যবসার জন্য খুবই লাভজনক। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভালোভাবে পরিচর্যা করলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায় এবং মাংসের জন্য ভালো।
আরো পড়ুনঃ ফাওমি মুরগি কত দিনে ডিম দেয়
হোয়াইট কিং কবুতরগুলো দেখতেও যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও অনেক স্বাদ। এই কবুতর গুলো গড়ে ১৩-১৪ বার ডিম দিয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে বেশিও দিতে পারে আবার কমও দিতে পারে, তার শারীরিক পরিচর্যার ওপর নির্ভর করে। প্রত্যেকবার ২টি করে ডিম দিয়ে থাকে। ভালোভাবে খাবার এবং ক্যালসিয়াম, ভিটামিন খাওয়ালে ১ জোড়া কবুতর বিক্রি করে প্রায়ই ২ হাজার টাকার মতো ইনকাম করা সম্ভব।
টেক্সান কবুতর
এই কবুতর গুলো উন্নত জাতের এবং মাংসের জন্য খুবই জনপ্রিয়। অল্প সময়ে বংশবৃদ্ধি ঘটে। যারা ব্যবসার উদ্দেশ্যে কবুতর খুঁজছেন তাদের জন্য টেক্সান কবুতরগুলো খুবই লাভজনক বলে মনে করা হয়। এই কবুতরগুলোর উৎপত্তি মূলত যুক্তরাষ্ট্র থেকে। তবে বর্তমানে সব দেশেই এই ধরনের কবুতরগুলো পাওয়া যায়। বছরে ১০-১২ বার ডিম দিয়ে থাকে এবং প্রতিবার দুইটি করে দেয়।
১৭-১৮ দিনের মধ্যেই ডিম থেকে বাচ্চা ওঠে। যদি গম, ভুট্টা, চালের গুড়া, মিনারেল, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন জাতীয় খাবার দেওয়া যায় তাহলে কম সময়ের মধ্যে লাভবান হওয়া যায়। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো সব ধরনের আবহাওয়ায় পালন করা যায়। যারা বেশি ডিম দেওয়া ও বাচ্চা দেওয়া কবুতর খুঁজছেন তাদের জন্য টেক্সান কবুতর গুলো অন্যতম।
কবুতরের জাত চেনার উপায়
কবুতরের জাত চেনার উপায় অনেকগুলো। অনেকে কবিতার শখের কারণে পালে আবার অনেকেই ব্যবসার জন্য পালে তাই যদি ভালো কবুতরের জাত চেনার উপায়গুলো জানা থাকে তাহলে অবশ্যই ভবিষ্যতে ব্যবসা কিংবা পালনের জন্য কোন ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে না। চলুন বিভিন্ন জাতের কবুতর চেনার উপায় গুলো কি কি সেগুলো নিয়ে নিচের আলোচনা করা যাক।
যেহেতু কবুতরের অনেক জাত রয়েছে তার মধ্যে যে সকল কবুতর মাংস জাত অর্থাৎ একটু ভারী সাইজের এবং বেশি মাংস হয় সে কবুতর গুলোর নাম হচ্ছে কার্ণো, হোয়াইটকিং, টেক্সান। অন্যথায় যে সকল কবুতর গুলো শরীরের দিক থেকে লম্বা/সরু এবং পাখাগুলো অনেক দীর্ঘ সে সকল কবুতরগুলো হচ্ছে হোমার এবং ফ্লায়ার জাত অর্থাৎ এ ধরনের কবুতর খুব বেশি উড়তে পারে। এই কবুতরগুলো আগে চিঠি আদান-প্রদানের জন্য বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করতো।
গলা কবুতর গুলো কিছুটা ছোট আকৃতির হয় ছোট ঠোঁট। কবুতরগুলো অন্যান্য কবুতরের জাতের চাইতে ছোট যার কারণে বলা হয় গোলা কবুতর। জালালী কবুতর গুলো লম্বা আকৃতির দীর্ঘ সময় ওড়ার অবদান রয়েছে এবং গলা, লেজ লম্বা। যারা শখের জন্য এবং সৌন্দর্যের জন্য কবুতর পালন করে তারা মূলত জালালী কবিতার গুলো পছন্দ করে।
কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক
কোন জাতের কবিতার পালন লাভজনক এ ব্যাপারে অনেকেই বিভিন্নভাবে খোঁজাখুঁজি করেন। কারণ বর্তমানে কবুতর শুধু শখের জন্য পালে তা কিন্তু নয় অনেকেই এটিকে নিজের আয়ের উৎস হিসেবেও বেছে নেয়। বর্তমানে অনেকেই শখ করে কবুতর পালন করে এবং কবুতরের বাচ্চা উৎপাদন করে সেগুলো বাজারজাত করে। কারণ বর্তমানে কবুতর পালন করে অনেকের লাভবান হচ্ছে।
যারা নিজে কবুতর এর খামার করতে চান এবং সেখান থেকে ইনকাম করতে চান তাদের জন্য ভালো হবে সে সকল কবুতর যেগুলো খুব তাড়াতাড়ি বাচ্চা দেয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে বড় হয়ে বাজারজাত করা যায় এবং খাবারের খরচ তুলনামূলক কম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো ইত্যাদি। তাই হোয়াইট কিং কবুতরগুলো যেহেতু মাংসের জন্য বিখ্যাত এবং বছরে অনেক কয়েকবার ডিম দিয়ে থাকে তাই ব্যবসার জন্য এই কবুতর গুলো খুবই ভালো।
আরো পড়ুনঃ চিনা হাঁস পালন পদ্ধতির সহজ উপায়
বাণিজ্যের জন্য সবচাইতে লাভজনক কবুতর এর জাত গুলো হচ্ছে কার্নো, হোয়াইটকিং, টেক্সান। এছাড়া যারা মাঝারি ব্যবসা শুরু করতে চান তাদের জন্য হোমার, বেকসন, দেশি মিক্স কবুতরগুলো পালন করা যেতে পারে কারণ এই কবুতর গুলো খুব কম খরচে এবং অল্প সময়ে বেশি বাচ্চা দেয় এবং আয়ও ভালো করা যায়।
গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায়
গিরিবাজ কবুতর হচ্ছে কবুতরের অন্যতম একটি জাত। অনেকেই এই জাতের কবুতরগুলো পালতে চান কিন্তু সঠিক ভাবে যাচাই এবং চিনতে না পারায় কেনার সাহস পাননা। তাই আজকে আপনাদের এই পোস্টে গিরিবাজ কবুতর সনাক্ত করার কিছু টিপস গুলো আলোচনা করব।
- গিরিবাজ কবুতর বিভিন্ন কালারের হয়ে থাকে কালো সাদা কিংবা হালকা বাদামি।
- এর ডানা গুলো হয় লম্বা প্রায় লেজের সমান বা তার থেকে একটু ছোট।
- গিরিবাজ কবুতরগুলো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে।
- এ ধরনের কবুতর গুলার চোখ উজ্জ্বল এবং গোল গোল হয়ে থাকে।
- গিরিবাজ কবুতরের ঠোঁট অনেক ধারালো এবং সূচালো হয়।
- এদের পায়ের পাতা পর্যন্ত লোম দিয়ে ঢাকা থাকে।
- এই কবিতাগুলো গোল গোল অনেকক্ষণ ঘুরে ঘুরে উড়তে পারে। ভালো প্রশিক্ষণ থাকলে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা পর্যন্ত উড়ার ক্ষমতা রাখে।
- অনেকে এই কবিতার গুলো রেসিং এর জন্য পালে। যদিও বিশেষ করে রেসিং এর জন্য হোমার কবুতরগুলো পালে। তবে গিরিবাজ কবুতরগুলো রেসিং কবুতর মত।
মাংসের জন্য কবুতরের জাত
টেক্সান পায়োনিয়ারঃ মাংস জাত কবুতরের জন্য এটি অন্যতম একটি কবুতরের জাত। এই কবুতরগুলো বছরে। এই কবুতরগুলোর উৎপত্তি আমেরিকা/যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের কবুতরগুলো দ্রুত ওজন বাড়ে এবং প্রতিবছর ১১-১৩ জোড়া ডিম দেয়। এদের গড় ওজন প্রায় ৭০০-৮০০ গ্রাম হয়ে থাকে, এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো।
মন্ডেইনঃ এই কবুতরগুলো খুবই বড় আকৃতির এবং এর উৎপত্তি সাধারণত ইউরোপে। বাংলাদেশের এ কবুতর গুলোর জাত খুব কম দেখা যায়। মাংসের জন্য খুবই ভালো। এ জাতের কবুতরগুলো সাধারণত ওজন ১.২-১.৫ কেজি হয়ে থাকে। এদের আকার বড় হওয়ার জন্য লাভজনক।
জায়ান্ট রানঃ মাংসর জন্য কবুতর জাত গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এর উৎপত্তি আমেরিকা থেকে। এর আকার ও নামের মতোই বড়। দ্রুত এই কবুতরগুলোর শরীরে মাংস বৃদ্ধি পায়। প্রায় এই কবুতরগুলোর ওজন দেড় কেজির বেশি হয়ে থাকে। এ সকল কবুতর গুলো রেস্টুরেন্ট কিংবা ভালো দামি বাজারে চাহিদা বেশি।
দেশি হাইব্রিড কবুতরঃ দেশি হাইব্রিড কবুতরগুলো বাংলাদেশের স্থানীয় পরিবেশের জন্য খুবই ভালো। বাইরের কবুতরের চাইতে দেশি হাবশি কবুতরগুলো খুবই লাভবান। এই কবুতরগুলো অল্প খরচে পালা যায় এবং দ্রুত বাচ্চা দেয়। ভালোভাবে পরিচর্যা করলে এই কবুতরগুলোর ওজন ৬০০-৭৫০ গ্রাম এর মত হয়ে থাকে। বছরে ১০-১২ বার ডিম পাড়ে।
গোলা কবুতর গোলা কবুতর গুলো অন্যান্য কবুতরের চাইতে কোন অংশে কম নয়। যদি অন্যান্য কবুতরের মতোঃ এ কবুতরগুলোর ভালোভাবে পালা যায় এবং সঠিক পরিচর্যা করা হয় তাহলে দ্রুত এই কবুতরগুলো বড় হয়ে ওজন বৃদ্ধি পায়। এবং মাংসের জন্য খুব উপযোগী হয়। এদের ওজন ৫০০-৬৫০ গ্রাম এর মত হয়ে থাকে।
কবুতর কতদিন পরপর ডিম দেয়
কবুতর কতদিন পর পর ডিম পারে এটি নির্ভর করবে কবুতরের শারীরিক গঠন এর প্রজনন ক্ষমতা, পরিবেশ এবং খাদ্যের উপর। তবে গবেষণা করে দেখা যায় প্রতি স্ত্রী কবুতর ৩০ থেকে ৪৫ দিন অন্তর ডিম পাড়ে। তবে অবশ্যই তার স্বাস্থ্য, বয়স, পরিবেশ এবং জাতের ওপর নির্ভর করে কিছুটা কম বেশি হতে পারে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে একটি কবুতরের ডিমের নতুন চক্র শুরু হয় প্রতি ৩০-৪০ দিনের মধ্যে।
তবে ভাল জাতের কবুতর হলে ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যেই ডিম পাড়ে। যদি সময় মত কবুতর ডিম না দিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই বুঝতে হবে তার খাবারে মিনারেল কিংবা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি রয়েছে। শারীরিক কোন দুর্বলতা রয়েছে, এছাড়া অল্প জায়গাতে বেশি কবুতর বসবাস করে, অতিরিক্ত গরম অথবা অতিরিক্ত ঠান্ডা এ ধরনের অনেক কারণ থাকতে পারে।
কবুতরের ডিম নষ্ট হওয়ার কারণ কি
কবুতরের ডিম নষ্ট হলে যে কোন খামারি কিংবা পালনকারীর জন্য অনেক সমস্যা এবং হতাশার কারণ হতে পারে। তাই যারা কবুতর পালা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন তাদের অবশ্যই জানা উচিত কি ধরনের সমস্যার কারণে কবুতরের ডিম নষ্ট হয়ে যায় এবং দ্রুত বাচ্চা ফোটে না বার ডিম ঘোলা হয়ে যায়। চলুন জিম নষ্ট হওয়ার কিছু কারণ গুলো উল্লেখ করা যাক।
- যদি পুরুষ কবুতর উপযুক্ত না হয় তাহলে তাদের বীর্য ডিমে না গেলে সেই ডিম নিষ্ফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ৬ মাসের কম বয়সী কবুতর গুলোর ডিম নিষিক্ত হয় না। অতিরিক্ত তরুণ কবুতর বা অতিরিক্ত বয়স্ক কবুতরের ডিম সাধারণত দুর্বল হয় অর্থাৎ নিষিক্ত হয় না।
- এছাড়া কবুতরের যদি ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন, কিংবা ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি থাকে তাহলে সেই কবুতর গুলোর ডিম নিষিদ্ধ হয় না।
- এছাড়া কবুতরের ডিম যদি অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া পাই তাহলে সেই ডিম নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারণ অতিরিক্ত গরম কিংবা অতিরিক্ত ঠান্ডায় ডিমের ভেতরের বিকাশ কমে যায়।
- এছাড়া স্ত্রী কবুতরগুলো যদি সঠিকভাবে ডিমে তা না দেই তাহলে ডিম নষ্ট হয়ে যায়।
- এছাড়া যদি কোন কবুতর অতিরিক্ত শব্দ শুনতে পাই তাহলে ভয়ে তারা ডিমের ওপর বসে না যার কারণে উড়ে যায়। কারন অনেক সময় কুকুর, বিড়াল এবং মানুষের কোলাহলে কবুতর ভয় পায়।
- অনেক সময় দেখা যায় কবুতর এর ঘর শক্ত যার কারণে ডিম পাড়ার পরে ডিম ফেটে যায় এবং সেই ডিম নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য কবুতর এর ঘরে কাঠের গুড়া খড়কুটো পেড়ে দিতে হয় যেন ডিম না ফাটে।
- অনেক ক্ষেত্রে কবুতরের ঘর যদি অপরিষ্কার থাকে তাহলে ডিমের মধ্যে জীবাণু ঢুকে যায়, যার কারণে ডিম নষ্ট হয়ে যায়।
- যদি পুরুষ কবুতর পোক্ত না হয় এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক কবুতর ডিম নিষিদ্ধ করতে পারে না। এজন্য পুরুষ কবুতরের বয়স এবং স্বাস্থ্য ভালো হতে হয়।
- এছাড়া যেকোনো পাখির ডিম যদি কেউ হাত দিয়ে শুয়ে থাকে তাহলে সেই ডিমে পাখিরা বসে না, যার কারনে ডিম নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য কবুতর এর ডিমে হাত দেওয়া উচিত নয়।
- যে সকল কবিতার নতুন বাচ্চা ফোটানোর জন্য ডিমে বসে তারা সঠিকভাবে ডিমে তা দিতে পারে না যার কারণে ডিম নষ্ট হয়ে যায়। অপ্রাপ্ত কবুতর এর কারণে ডিম নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়
অনেকে আছেন যারা কবুতর পালতে চান বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য আবার অনেকেই আছেন শখের বসে বাড়িতে কবুতর পালন করেন। তাই অনেকেই জানার আগ্রহ রয়েছে যে কি ধরনের খাবার খাওয়ালে তাড়াতাড়ি কবুতর ডিম দিয়ে থাকে। হ্যাঁ যাদের কবুতর পালার শখ রয়েছে তাদের অবশ্যই জানা দরকার কি ধরনের খাবার কবুতরকে উচিত।
- গম
- ভুট্টা
- চালের কুড়া
- খেসারি বা মসুর ডাল
- মুগ ডাল
- সরিষা
- ধনিয়া
- তিল
- চাল
- সিদ্ধ করার ডিমের খোসা গুঁড়ো করে
- কালোজরা
- রসুনের রস বা পানি
- পেঁয়াজের রস
- সেদ্ধ চাল অথবা ভাত
- ভিটামিন পাউডার মিশ্রিত ভাত
কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি ডিম ও বাচ্চা দেয় সম্পর্কিত (FAQ)
প্রশ্ন: হোয়াইটকিং কবুতর কি সত্যিই সবচাইতে বেশি ডিম দেয়?
উত্তর: হ্যাঁ, যদি সঠিক পরিচর্যা পায় তাহলে এ জাতের কবুতর বেশি ডিম দিয়ে থাকে বছরে ১২-১৪ বার।
প্রশ্ন: কবুতরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে কি সমস্যা হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, ডিমের খোলস দুর্বল হয়ে যায় ডিম ভেঙে যায় বা ডিম না আসতেও পারে।
প্রশ্ন: ডিম ও বাচ্চা উৎপাদনের জন্য কবুতরের উপযুক্ত বয়স কত?
উত্তর: ৬ মাস থেকে ৩ বছর এর মধ্যে কবুতর সবচাইতে বেশি ডিম দেয়।
প্রশ্ন: বাচ্চা ফোটার পরে কত দিনে নতুন ডিম পাড়ে?
উত্তর: সাধারণত ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে পুনরায় ডিম দেয়।
প্রশ্ন: বেশি ডিম ও বাচ্চা পাওয়ার জন্য কত জোড়া কবুতর রাখা উচিত?
উত্তর: ব্যবসার জন্য খামারে ১০-২০ জোড়া কবুতর দিয়ে শুরু করা ভালো।
শেষ মন্তব্যঃ কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি ডিম ও বাচ্চা দেয়
উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলতে পারি যে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য কবুতর এর যাচ্ছে না অত্যন্ত জর। তাই হোয়াইটকিং কিংবা টেক্সান কবুতরগুলো জাত হিসেবে খুবই ভালো এবং খুবই উৎপাদনশীল। যদি সঠিক পরিচর্যা করা যায় তাহলে দ্রুত এই কবুতরগুলো পালন করে লাভবান হওয়া যায়। কবুতর কেনার সময় যদি অভিজ্ঞ কাউকে সঙ্গে নিয়ে যান তাহলে আপনার জন্য ভালো হবে। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি ডিম ও বাচ্চা দেয়।
টেকিসময় ডট কম ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url